তথ্য সেন্সাসে সুরক্ষিত তো? কড়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি কেন্দ্র


সুমন পাত্র, বিশেষ প্রতিবেদন: নরেন্দ্র মোদির ডিজিটাল ভারত। সাইবার প্রতারণারও বটে। প্রতারকদের হাতে চাই শুধু একটাই অস্ত্র—ডেটা। তথ্য। আম আদমির তথ্য। আর ভারতের সবচেয়ে বড় তথ্যভাণ্ডার কী? সেন্সাস রিপোর্ট। সাধারণ মানুষের প্রত্যেকটা খুঁটিনাটি তথ্য‌ পাওয়া যায় এখানেই। আসন্ন জনগণনা তাই যত না গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে বেশি চ্যালেঞ্জেরও। কারণ, এবার সবটাই হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। এবং কোডে। যেমন, হিন্দু হলে ‘১’। মুসলমান হলে ‘২’ ইত্যাদি। রাজ্যে রাজ্যে অগুনতি সরকারি কর্মী-অফিসার নামবেন কাজে। তথ্য সংগ্রহ করবেন। তা আপডেট করবেন নিজেদের ডিভাইসের অ্যাপে। সেই তথ্য সরাসরি আপলোড হবে দিল্লির মান সিং রোডে ‘জনগণনা ভবনে’র সেন্ট্রাল সার্ভারে। প্রশ্ন একটাই, কোনওভাবে এই ডেটা ‘লিক’ হয়ে যাবে না তো? এখন খোলা বাজারে বিক্রি হয় মানুষের ‘গোপন’ তথ্য। জনগণনাতেও কিন্তু প্রত্যেকের তথ্যই ‘গোপনীয়’। ফর্মের উপরে তা লেখাও থাকে। সবই যেখানে মানুষের উপর নির্ভরশীল, তথ্য পাচারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্র। সেন্সাস ডেটা সুরক্ষিত করতে শুরু হয়েছে দফায় দফায় বৈঠক। চ্যালেঞ্জ একটাই—‘গোপন’ তথ্য সুরক্ষিত রাখা।

আজ, সোমবার প্রকাশ হবে জনগণনা সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি। ২০২৬ সালে শুরু হয়ে দুই পর্বে সেন্সাসের কাজ শেষ হবে ২০২৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। তারপর যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনার পর রিপোর্ট প্রকাশ হবে ওই বছরেরই মার্চ মাসের পর। রবিবার বিকেলে এ ব্যাপারে সেন্সাস কমিশনার মৃত্যুঞ্জয় কুমার নারায়ণকে ৬, এ কৃষ্ণ মেনন মার্গে নিজের বাংলোয় ডেকে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর মঙ্গলবার কমিশনারকে ডেকেছেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিবও। লক্ষ্য হল, ডিজিটাল ভারতে সেন্সাসকে ডিজিটালি সুরক্ষিত রাখা। এবং অবশ্যই তথ্য যাচাই। কোনওভাবেই যেন ভুল তথ্য সার্ভারে না ওঠে। যেমন, বাবার বয়স ৪০। ছেলে ২২। কিংবা পরিবারের তিনজন হিন্দু। একজন খ্রিস্টান। ...কেন্দ্রীয় স্তরে স্ক্রুটিনির পর এমন কোনও অস্বাভাবিক বা সন্দেহজনক তথ্য মিললেই সেই পরিবারের কাছে ফের যাচাইয়ে যাবেন জনগণনা কর্মী। দেখবেন, কোনও ভুল তথ্য নেওয়া হয়েছে কি না। পালক পিতার কাছে থাকেন? ধর্ম পরিবর্তন হয়েছে? যাচাই হবে সবটাই। 

উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এবার জনগণনার নথিতে যুক্ত হবে ‘অন্যান্য’ (আদার্স) তথা সাধারণের নির্দিষ্ট জাতি বা কাস্ট। হিন্দু, শিখ এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বরাই কেবলমাত্র তফসিলি জাতিভুক্ত হয়। উপজাতি যে কোনও ধর্মাবলম্বীই হতে পারেন। সরকার ধন্দে আছে, ‘অন্য’দের মধ্যে যদি কেউ জাতি জানাতে না চান, তাহলে কী হবে? সেই ঘর কি ফাঁকা রাখা হবে? ভারতের মতো দেশে এমন জাতির সংখ্যা প্রচুর। অথচ, তার প্রমাণে সিংহভাগেরই কোনও শংসাপত্র নেই। তাহলে কি হেড অব দ্য ফ্যামিলির মুখের কথাই বিশ্বাস করা হবে? সেন্সাসের ডেটাশিট তৈরি হচ্ছে। প্রশ্ন নিয়েই!

Comments

Popular posts from this blog

‌বন্যাদূর্গতদের সচেতনতা ‌শিবির

আমরা ব্যতিক্রমী সংস্হার উদ্যোগে জাতীয় চিকিৎসক দিবস উদযাপন

বিরাটি সমন্বয়ের ডাকে প্রতীকী অনশন মঞ্চ