"তোমরা আমাকে মেয়েদের পিরিয়েডের রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো " - উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে

********* স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজীর বাণী নিয়ে ট্রোল,                   সমালোচনা সোশ্যাল মিডিয়ায় *********

সৌঃ সোশ্যাল মিডিয়া

 সঞ্জয় মন্ডল :  এত বড় একটা লজ্জাজনক বিকৃত পোস্ট, নিরব বুদ্ধিজীবী থেকে সমাজের সাধারণ মানুষ । 

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি পোস্ট করেছেন একজন ব্যক্তি । ছবিটি হলো নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর । ছবির সামনে রাখা রয়েছে একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন , যাকে চলতি কথায় আমরা  প্যাড বলি । সেই  প্যাডের মধ্যে  লাগানো রয়েছে মেয়েদের  রজস্বলা পর্বের রক্ত।  এই ছবিকে ঘুরে সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠেছে আলোড়ন। দেশের এক স্বাধীনতা সংগ্রামীকে নিয়ে মজার পোস্টের মাধ্যমে তার সন্মান নষ্ট করা হচ্ছে। 

আজ থেকে প্রায় ৭৮ বছর আগে আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ক নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন,  " তোমরা আমায় রক্ত দাও , আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব" ।  এই বজ্রকন্ঠের বাণী উত্তাল করে দিয়েছিল গোটা দেশবাসীকে । পরাধীনতার নিকষ কালো অন্ধকারে ডুবে থাকা ভারতবাসীর কাছে এই আহবান যেন দেবতার আদেশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ।  জাতি ধর্ম, বর্ন, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সমাজের সমস্ত অংশ উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল  মুহুর্তের মধ্যে । আজ এত বছর পরেও এই আহ্বান ভারতবাসীকে মুহূর্তের মধ্যে প্রাণোচ্ছল করে তোলে। ভারতের স্বাধীনতার ৭৪ তম বর্ষে এসে দাঁড়ালাম আমরা।  এ  কোন ভারতবর্ষকে দেখছে ভারতবাসী। এরকম একটি নোংরা অপমানজনক পোষ্টের বিরুদ্ধে আশ্চর্যজনকভাবে  নীরবতা পালন করছে সমাজের প্রায় সকল অংশের মানুষ।  সমাজে বুদ্ধিজীবী বলে যারা নিজেদেরকে দাবি করে ব্যক্তিস্বার্থে পান থেকে চুন খসলে  যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট এর বন্যা বইয়ে দেয় তারা সম্পূর্ণ বোবা হয়ে গেছে।  নিরব সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি। বর্তমান শাসকদল যারা সামান্য কার্টুন চিত্র  পোস্ট করার অপরাধে অধ্যাপককে জেলে পাঠাতে দ্বিধা করেন না সেই সরকারের প্রশাসন কি ঘুমাচ্ছে? 

সৌঃ সোশ্যাল মিডিয়া

ভাবতে অবাক লাগছে সমাজের সর্বস্তরের অপরাধ নিয়ে নিরন্তর লড়াই আন্দোলন করে বলে দাবী করা বামপন্থীরা কোথায়।  সুভাষচন্দ্র বসুর নিজের হাতে গড়া ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতাকর্মীরা আশ্চর্যজনকভাবে নিরব আজ। এত বড় একটা অপরাধ করেও যদি অপরাধের কোনো শাস্তি না হয় সেই লজ্জা কাদের ? - এ নিয়ে ভাবার সময় কি সমাজের কোন অংশের মানুষের মধ্যে আছে ? 

 এসবের পরেও একটা প্রশ্ন থেকে যায় - কোথায় হারিয়ে গেছেন সেই সমস্ত নারীবাদীরা যারা কথায় কথায় নারীর অধিকার নিয়ে লড়াই আন্দোলনের কথা বলে । বাজার গরম করেন । এই অপমান কি নারীদের অপমান নয়,,. কেউ প্রতিবাদ করুক বা না করুক প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিকে শনাক্ত করা।  প্রশাসন যদি এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে না পারে  আগামী দিনে আরো নোংরা পোস্ট  আরো অসভ্য সমাজ  আমাদের জন্য  অপেক্ষা করছে।  "অবাক জলপান" এর মত "অবাক নীরবতা" নামে  কোনো নাটক যদি রচনা হয় তাতেই কলঙ্কিত অধ্যায় অবশ্যই সংযোজিত হবে। 

Comments

Popular posts from this blog

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি