তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল সামাল দিতে না পেরে বিধানসভা ছেড়ে পালিয়ে গেলেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী

তাপস মণ্ডল, হুগলি : বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে ফের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। ভোট মিটতে না মিটতেই ফের বলাগড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল।বলাগড় বিধানসভা এলাকার নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদের জেরে বলাগড় কেন্দ্র ছেড়ে কলকাতায় ফিরতে বাধ্য হলেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বাসিন্দা বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। একুশের বিধানসভা সাহিত্যিক মনোরঞ্জনবাবুকে হুগলী জেলার বলাগড় কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সাল থেকে ওই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তৃণমূলের অসীম মাজি। জয়ের পর থেকেই অসীম-মনোরঞ্জন দ্বন্দ্ব শুরু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে যায় বলাগড় তৃণমূলের অন্দরে।

সম্প্রতি, বিষয়টি চরমে ওঠে জিরাট কলেজের ফ্লেক্স টাঙানো ঘিরে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী সরাসরি ফেসবুক লাইভ করে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। বলাগড়ের পুরনো তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বিজেপির আঁতাত রয়েছে বলেও দাবি করেন বিধায়ক। সেই সঙ্গে অভিযোগ করে মনোরঞ্জনবাবু আরও বলেন, তাঁকে হারাতে আসাওরে নেমেছিলেন অসীম মাজি। প্রাক্তন বিধায়কের এলাকা থেকে পিছিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী।

এই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে ক্রমশ জটিল হতে শুরু করে বলাগড়ের পরিস্থিতি। এই অবস্থায় ওই বিধানসভা কেন্দ্র ছেড়ে কলকাতায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বিধায়ক মনোরঞ্জন। সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে সমগ্র বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় নিজের কার্যালয়ে বসেন বলাগড়ের বিধায়ক। দুয়ারে বিধায়ক পরিষেবার জন্য বেশ কয়েকটি দফতর খুলেছেন তিনি। সোমবার গুপ্তিপাড়া এলাকার বিধায়ক কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা ছিল মনোরঞ্জনবাবুর।

কিন্তু ওই দিন সকালের দিকে ফেসবুক পোস্ট করে বিধায়ক স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে দেন, “আজ আপনাদের পরিষেবা দেবার জন্য আমার গুপ্তিপাড়া বিধায়ক কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্ত আমি কলকাতা চলে আসতে বাধ্য হবার জন্য গুপ্তিপাড়ায় উপস্থিত থাকতে পারছি না।” সেই সঙ্গে তিনি আরও লেখেন, “আমি কেন আচমকা কলকাতা এলাম এটা আপনাদের নিশ্চয় বলে দিতে হবে না। আপনাদের পরিষেবা ব্যাহত হবার জন্য ওই ঘটনা, যারা ওইসব ঘটনাকে পরিকল্পিত ভাবে সংঘটিত করে চলেছে তারাই মূলত দায়ী।”

সমগ্র ঘটনার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকছে বলাগড়ের বিধায়কের গুপ্তিপাড়া কার্যালয়। গুপ্তিপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি মঙ্গলবার ডুমুরদহ কার্যালয়ে এসে কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন মনোরঞ্জনবাবু। বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর নেতাদের আক্রমণ করে তিনি লিখেছেন, “এই যে আপনারা ‘দুয়ারে বিধায়ক’ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হলেন এর জন্য আমার প্রতি নয়, আপনার রাগ তাদের প্রতি হওয়া বাঞ্ছনীয়। যারা বন্দুক রিভালবার দেখিয়ে ভোটে জেতে তাদের জনগনের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা থাকে না। তাঁরা মনে করে ওইভাবে বার বার জিতে যাবে। আমি তেমনভাবে জিতিনি, জিততে চাই না।

যদিও এই প্রসঙ্গে জানতে বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাজিকে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাই তার প্রতিক্রীয়াও জানা যায়নি। 

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের