আত্মপ্রকাশ করল বাংলার প্রথম মুক্ত পন্থী বাঙালি জাতিয়তাবাদী সংগঠন ঐক্য বাংলা
আত্মপ্রকাশ করল বাংলার প্রথম মুক্ত পন্থী বাঙালি জাতিয়তাবাদী সংগঠন ঐক্য বাংলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, কলকাতা: বাঙালি জাতিয়তাবাদের প্রয়োজন বাংলা অনুভব করেছে প্রতি মুহুর্তে। হিন্দি আগ্রাসনের কাছে মাথা নোয়াতে বাধ্য হওয়া বাঙালিকে তীব্র প্রতিবাদে শামিল হতে উদ্বুদ্ধ করতে তাই এগিয়ে এসেছে ঐক্য বাংলা, একটি অদলীয় রাজনৈতিক সংগঠন। বুধবার বিকালে কলকাতা প্রেস ক্লাবে বাংলার প্রথম মুক্ত পন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন ঐক্য বাংলা র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান ছিল। উপস্থিত ছিলেন দলের নেতৃবৃন্দ - সাধারণ সম্পাদিকা সুলগ্না দাশগুপ্ত, সহযোদ্ধা দেবায়ন সিংহ, অভিজ্ঞান সাহা, আশীষ ভট্টাচার্য, সোমনাথ সরকার, চন্দন দাস, মোনালিসা মীত্র সহ আরো অনেকে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লেখক অনির্বাণ মুখার্জি, সংগীতশিল্পী অমিত রায়, কৌতুকাভিনেতা ও মানবাধিকার কর্মী, সিপিডিআর সংস্থার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ, চিত্রপরিচালক অরূপ ভঞ্জ প্রমুখ। উদ্বোধনী বক্তব্যে সুলগ্না দাশগুপ্ত উল্লেখ করেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রয়োজনীয়তা। তাঁর কথায় উঠে আসে বাংলার বর্তমান কর্মসংকট, ভাষা আগ্রাসনের সমস্যা প্রভৃতি। তিনি বলেন, " পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কাজের খোঁজে শহরে আসার হার ভিনরাজ্যের মানুষ এর কলকাতায় আসার হারের থেকে অনেক কম। আজ শহর থেকে গ্রাম, কাঞ্চনজঙ্ঘাা থেকে কাকদ্বীপ, কৃষক থেকে উচ্চশিক্ষিত কর্পোরেট কর্মী - সমস্তত বাঙালি পিতা-মাতাই চান তার পরবর্তী প্রজন্ম বাংলার বাইরে কাজ খুঁজেে নিক।" তিনি আরো তুলে ধরেন হিন্দি ভাষার কাছে বাঙালির প্রতিনিয়ত অপমান এর বাস্তব চিত্র। "বাংলার মাটিতে আজকে হিন্দি না জানায় টন টিটকিরি, অপমান সহ্য করতে হচ্ছে বাঙালিকে," তিনি জানান। বাঙালির অর্থনৈতিক ক্রম - পশ্চাৎ অপসারণ ই বাঙালি র আত্মবিশ্বাসের অবক্ষয়ের মূলে বলে তিনি মনে করেন বলে জানান। জনমুখী মুক্ত পন্থার রাস্তায়, পশ্চিমবঙ্গের ভূমিপুত্রদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জাতির সার্বিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। সংগঠনের ভিত্তি পত্র পাঠ করে শোনান সহযোদ্ধা দেবায়ন সিংহ। সংগঠনের লক্ষ্য নির্ণায়ক পাঁচটি মূল স্তম্ভ কে তুলে ধরেন তিনি উপস্থিত শ্রোতাদের সামনে - "সবার উপর বাঙালি সত্য" (বাংলার মাটিতে বাঙালির অগ্রাধিকার, ভারতে হিন্দি ভাশির সাথে সমানাধিকার), "বাংলার ক্ষমতা বাংলার হাতে" (ভারতে অধিকতর যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ কেন্দ্র থেকে রাজ্যগুলির হাতে), "কিনুন বাঙালির থেকে কাজে রাখুন বাঙালিকে" (ব্যবসা এবং চাকরিতে বাঙালির অগ্রাধিকার), "বাঙালি সাহসী বাঙালি উদ্যোগী" (বাঙালি যুবসমাজে উদ্যোগ মুখী, মেধা তান্ত্রিক মানসিকতা গড়ে তোলা), এবং "সফল বাঙালির ঠিকানা বাংলা" (বাংলায় বাঙালির জন্য উপযুক্ত মানের কর্মসংস্থান)।
পরবর্তী পর্যায়ে তে বক্তব্য রাখেন সভায় উপস্থিত গুণীজনেরা। লেখক অনির্বাণ মুখার্জি প্রশ্ন তোলেন, কলকাতায় যখন কান পাতলেই বাংলার বদলে হিন্দি শোনা যায়, তখন এটা দিল্লি নাকি বাংলা সে সন্দেহ দানা বাঁধে না কি? পাশাপাশি বাঙালির আপসপন্থী মনোভাব নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন অমিত রায়। একই বক্তব্য বিপ্লব ঘোষের। তিনি জানান বাঙালির স্বার্থে লড়া ঐক্য বাংলার পাশে তাঁর সংগঠন সিপিডিআর থাকবে।
অপরদিকে অরুপবাবু বলেন, বড়দাদা যেমন সবকিছুকে মেনে নিয়েও কটূক্তি শোনে, তেমনি বাঙালিও নিজের মাটিতে সব জাতি, ভাষারর আধিপত্য মেনে নিয়েও চুপ। কিন্তু এই পন্থায় বাঙালির অধিকার রক্ষা করা সম্ভব না। তাই এরকমটা যে আর চলবে না তা পরিষ্কার জানিয়ে দেন তিনি একজন সচেতন বাঙালি হিসেবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুলগ্না দাশগুপ্ত জানান, শিগগিরই সি এ এ, এন আর সি বিরোধিতা থেকে চাকরিতে ভূমিপুত্র সংরক্ষ সহ বিভিন্ন অবশ্য প্রয়োজনীয় দাবি নিয়ে রাস্তায় নামবে ঐক্য বাংলা।
Comments
Post a Comment