মৃত্যুর আগে কি হয়েছিল গায়ক কে কে এর

নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতাঃ কলকাতায় গান গাইতে এসে মৃত্যু হলো বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী কেকের। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে অলবিদা জানালেন তার অগনিত ভক্তদের। গতকাল কলকাতার নজরুল মঞ্চে গানের অনুষ্ঠান ছিল কেকে- এর । গুরুদাস কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে বিশেষ আকর্ষন ছিল কেকে এর গান। ২০টি গানের তালিকা নিয়ে এসেছিলেন গান গাইতে। কে জানত যে এটাই তার জীবনে গাওয়া শেষ মঞ্চস্থ গান।  

হলের চারিদিকে ছাত্র ছাত্রীদের ভিড়। উচ্ছাস। একের পর এক সুপারহিট গান গাওয়ার আবেদন কেকের কাছে। তার উপর হলের ক্যাপাশিটি অতিক্রম করে গিয়েছিল গতকাল গুরুদাস কলেজের অনুষ্ঠানে।  কেকে এর গান শুনতে অগনিত ছাত্রছাত্রীরা এসেছিল। একপ্রকার জোর করেই হলে ঢুকে পড়ে বহু ছাত্রছাত্রীরা। তার জেরে কিন্তু যথেষ্টই অস্বস্থিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় হলে। হলের ক্যাপাসিটির থেকে ৪গুণ বেশী লোককে ঢোকানো হয়েছিল এইদিনের এই অনুষ্ঠানে। গুরুদাস কলেজ কতৃপক্ষ নজরুল মঞ্চ হলের কতৃপক্ষদের কোন নিয়ম নীতির কোনো তোয়াক্কাই করেননি। যার ফলে নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষর তরফ থেকে হলের এসি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যারা অনুষ্ঠান দেখছিল তারাই টিকতে পারছিল না এতো গরম আর ঘামে। তার উপর এতো লোকের ভিড়। 

কেকে অনুষ্ঠান করতে করতে অনেকবার জানিয়েছেন যে তার খুব গরম লাগছে। পারফর্ম করতে কষ্ট হচ্ছে বলেও সে বলে উদ্যোক্তাদের। এমনকি নিজের ঘামে ভেজা জামাও দর্শকদের দেখান তিনি।বার বার তোয়ালে দিয়ে ঘাম মুছছিলেন গায়ক কেকে। বোতলের পর বোতল জল খাচ্ছিলেন গান গাইতে গাইতে। একটা সময় তিনি অতিষ্ট হয়ে বলেন লাইটম্যানদের পিছনের লাইটগুলো বন্ধ করে দিতে, উনি গরমে থাকতে পারছেন না। পিঠ জ্বলে যাচ্ছে। এরপরই তিনি শো শেষে কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে নিজের রুমে ফিরে আসেন। নিজের রুমে এসে চেয়ারে বসার পর থেকে শরীরে অসুস্থতা বোধ আরো বেড়ে যায়। রুম থেকে রিসেপশনে ফোনও করেছিলেন কেকে। তারপর চেয়ারে বসে থাকতে থাকতে পরে যান তিনি।  টেবিলে লেগে মাথায় আঘাত পান তিনি। 

এরপর গায়ক কেকে - কে CMRI হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্যে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার পরিবারের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্র সদনে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গায়ক কেকে - কে বিদায় জানাল কলকাতা। 

১৯৬৮ সালের ২৩শে আগস্ট দিল্লিতে এক মালয়ালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সঙ্গীত শিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ। তাঁর বাবা সি এস নায়ার এবং মা কুনাথ কনকাবলীও ভালো সঙ্গীত শিল্পী ছিলেন। এমন কি তাঁর পরিবারের অনেকেই গান গাইতেন। তবে কেকে তাঁর গানের জগতে প্রথম প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন তাঁর দাদুর থেকেই। বাবা তাঁকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্যে পাঠালেও দুদিনের বেশি প্রশিক্ষন নেয়নি কেকে। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কিরোরি মাল কলেজ থেকে স্নাতক কোর্স সম্পন্ন করে কেকে বেশ কিছুদিন এক বেসরকারি অফিসে চাকরিও করেন। পড়ে সব ছেড়ে মুম্বাই যান। 

প্রায় ১১ টি ভাষায় বহু বিজ্ঞাপনে গান গেয়েছিলেন কৃষ্ণকুমার। ১৯৯৬ সালে এ আর রহমানের সাথে এক তামিল ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ পান। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে "হাম দিল দে চুকে সানাম" হিন্দি ছবিতে  "তড়প তড়প কে ইস দিল সে" গানটি গেয়ে শ্রোতাদের মন জয় করে নেয় কৃষ্ণকুমার। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি গায়ক কৃষ্ণকুমারকে। এরপর তাঁর ভক্তদের কাছে কৃষ্ণকুমার থেকে হয়ে যায় কেকে। তারপর থেকে একের পর এক ছবিতে প্লে ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে থাকেন কেকে। সারা দেশ জুড়ে সুনামের শীর্ষে পৌচ্ছে যান তিনি। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোক স্তব্ধ গোটা সঙ্গীত মহল। 

About Channel: Sothik Barta is a online news channel which covers the entire social media platform. Political, non-political,entertainment, crime, talk show, debate show are present in this channel. It cover different news from different areas, cities and districts news.

Our website: www.sothikbartaofficial.blogspot.com

Social Media Handles:

Facebook: https://www.facebook.com/sothikbarta/

Youtube : https://www.youtube.com/channel/UCSGK...

Twitter: https://twitter.com/SothikBarta





Comments

Popular posts from this blog

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি