ইস্কুলে বায়োস্কোপ প্রকল্পে সহযোগী হলো কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স কুচিন

 


শ্রীজিৎ চট্টরাজ,কলকাতা:সোভিয়েত বিপ্লবের পর লেনিন বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার আইজেনস্টাইনকে বলেন, বিপ্লবের প্রাথমিক পর্যায়ে এখন আমরা জয়ী। এখন দরকার সাংস্কৃতিক নির্মাণে জাতি গঠন। এই দায়িত্ব আপনাকে নিতে হবে। অর্থাৎ সেই উনিশ দশকেই চলচ্চিত্রের মত গণ মাধ্যমের শক্তিশালী ভূমিকার আন্দাজ করে নেন লেনিন। সেটাই ছিল তাঁর দূরদর্শিতা। পরবর্তী সময়ে বিশ্বের আঙিনায় প্রমাণিত হয়েছে মানুষের জীবনে শুধু বিনোদনের শর্ত নয়, শিক্ষা রুচি ও সংস্কৃতিবোধ নির্মাণেও বড় ভূমিকা নিয়েছে চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র আবিষ্কারের একবছরের মধ্যেই আমাদের দেশে চলচ্চিত্রের আগমন। ইতিমধ্যেই চলচ্চিত্র শতবর্ষ পার করেছে।ভারতের সিনেমা সাম্রাজ্যে অনেক মণিমানিক্য নির্মাণ হয়েছে। বাংলা ছবিও অস্কারের দৌলতে বিশ্বের নজরে আলাদা বৈশিষ্ট্য দাবি করছে। কিন্তু কর্পোরেট দুনিয়ায় ইংরেজির প্রাধান্যে নতুন প্রজন্ম মাতৃভাষাকে কিছুটা সরিয়ে বিশ্ব বাজারে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে ইংরেজিকে আপন করে নিয়েছে। 


বাধ্যবাধকতা থাকলেও কলকাতা শহরের ছেলেমেয়েদের কাছে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয়কে একটা স্থায়ী রূপ দিতে কিছু মানুষ উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁদের অন্যতম কৌশিক চক্রবর্তী। এক অভিনব প্রকল্পের কাজ শুরু করেন আজ থেকে ছ বছর আগে। ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে স্কুলে শিশু ও কিশোরদের উপযোগী সিনেমা দেখানোর আয়োজন করে চলেছেন কৌশিক ও তাঁর কিছু সমমনস্ক সহযোগী

শুধু সিনেমা দেখানো নয়, ছবির বিষয়বস্তুর ওপর বৌদ্ধিক চেতনা ও সৃষ্টি মূলক মনন নির্মাণেরও সহায়তা করা হয়।গত দুবছর করোনা প্রকোপে সিনেমা দেখানো হয়,অনলাইন প্রযুক্তিতে। সত্যজিৎ রায়ের শতবর্ষে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একগুচ্ছ ছবি নিয়ে কৌশিক পৌঁছে যাচ্ছেন নির্বাচিত কিছু স্কুলে।প্রকল্পের নাম ইস্কুলে বায়োস্কোপ। বাংলা সিনেমার ঐতিহ্যময় অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যতের রূপরেখা সহজেই এখন পৌঁছে যাচ্ছে । চলতি বছরের ১৪ জুলাই থেকে একমাস ব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব চলবে। এবার ছবির তালিকায় থাকছে- সবুজ দ্বীপের রাজা, ফটিকচাঁদ, গুপী বাঘা ফিরে এলো, পাতালঘর, অ্যাডভেঞ্চারস অফ জোজো, দুধ পিঠের গাছ, লাদাখ চলে রিক্সাওয়ালা, চরৈইবতি ইত্যাদি। শহরের প্রায় ২০ টি স্কুলে ছবি প্রদর্শনের ব্যবস্থা হয়েছে।

কৌশিক চক্রবর্তী জানালেন, এই বছর আন্তরিক সহযোগিতা নিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বিখ্যাত রান্নার সরঞ্জাম নির্মাতা কুচিনার কর্ণধার নমিত বাজোরিয়া। পাশে এসেছেন শহরের সেরা ফ্যাশন ডিজাইনিং স্কুল আই এন আই এফ ডি। সংস্থার লিন্ডসে স্ট্রিটের কার্যালয়ে এই উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে কৌশিক চক্রবর্তী জানালেন, দীর্ঘমেয়াদি এই ইস্কুলে বায়োস্কোপ প্রকল্প আগামী দিনে রাজ্যের প্রান্তিক অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের কাছে পৌঁছে দেব। যেখানে পেটের চিন্তার বাইরে সিনেমা দেখা বিলাসিতা মাত্র। সামাজিক দায়বদ্ধতা আর আন্তরিক প্রয়াসকে সম্বল করে আমাদের পথ চলা। ইতিহাস সাক্ষী দেবে আগামীদিন।

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের