চারু মার্কেট থানার ইনস্পেক্টর সুভাষ অধিকারী ও তার টিমের তৎপরতায় রক্ষা পেলো সদ্য জাতকের মায়ের


 

মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, রাত আন্দাজ সাড়ে বারোটা। টালিগঞ্জ এলাকার চারু মার্কেট থানায় খবর আসে, টালিগঞ্জ ফাঁড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে জটলা করছেন উত্তেজিত কিছু মানুষ। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন চারু মার্কেট থানার ওসি, ইনস্পেক্টর সুভাষ অধিকারী, সঙ্গে অ্যাডিশনাল ওসি, ইনস্পেক্টর সৈয়দ সিরাজুল আলম, এবং সাব-ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ দাস, জয়দেব বৈরাগী, রাজু দেবনাথ সহ থানার একটি ফোর্স।

হাসপাতালে পৌঁছে তাঁরা জানতে পারেন, কিছুক্ষণ আগেই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক মহিলা, কিন্তু তার পর থেকে ক্রমাগত রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর শারীরিক অবস্থা দ্রুত আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে। হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছেন তাঁরই উদ্বিগ্ন পরিজনেরা। যে মহিলা চিকিৎসক এবং তাঁর সহকর্মী সন্তান প্রসব করিয়েছিলেন, তাঁরা দুজনেই বাড়ি চলে গিয়েছেন। চিকিৎসকের বাড়ি রাজারহাটের নিউটাউনে, এবং সহকর্মীর বাড়ি হাজরা এলাকায় বলে জানা যায়।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আর সময় নষ্ট না করে চিকিৎসক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন ইনস্পেক্টর সুভাষ অধিকারী। তাঁর নিজের পরিচিত এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকেও জানান ঘটনার কথা। তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে আসতে গাড়ি পাঠিয়ে দেন তিনি। চিকিৎসকের দল যখন এসে পৌঁছন, রাত তখন প্রায় দেড়টা। শুরু হয় প্রাণ বাঁচানোর লড়াই, ওদিকে হাসপাতালের বাইরে যে কোনোরকম পরিস্থিতি সামাল দিতে অপেক্ষায় থাকে ইনস্পেক্টর সুভাষ অধিকারী তাঁর টিম। রাত প্রায় তিনটের সময় চিকিৎসকরা জানান, অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের প্রায় ৮৫ শতাংশ রক্ত হারিয়েছেন রোগী, তাঁকে বাঁচাতে হলে সেই মুহূর্তেই প্রয়োজন রক্ত এবং প্লাজমার।

ফের একবার কাজে লেগে যান ইনস্পেক্টর সুভাষ অধিকারী তাঁর টিম। এক মিনিটও যাতে নষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করতে গাড়ি নিয়ে ছোটেন ব্লাড ব্যাংকে, রক্ত এবং প্লাজমা যোগাড় করে আনেন নিজেরাই। ভোর হওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে অবশেষে সকাল ছটা নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরোন তাঁরা। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল, ভাল আছে তাঁর সন্তানও। পুলিশের ভূমিকায় অভিভূত মহিলার পরিবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এই সাহায্য তাঁরা মনে রাখবেন আজীবন।

সংগৃহীত

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের