এবার তৃণমূলের কি কীর্তি ?


সঞ্জয় মন্ডল, কলকাতা:- 
রাজ্য রাজনীতি আঙিনা ছেড়ে তৃণমূল এখন সর্বভারতীয় স্তরে নিজেদেরকে মেলে ধরতে চাইছে। সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূল নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। ইতিমধ্যেই গোয়া ত্রিপুরাতে তৃণমূল সংগঠন করার জন্য মরিয়া হয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর-পূর্ব ভারতে তৃণমূল নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণের জন্য ইতিমধ্যেই প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা তথা অন্যতম রাজনীতিবিদ সন্তোষ মহান দেবের কন্যা সুস্মিতা দেব কে বাংলা থেকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে। একইভাবে গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুই জিনহো ফেলেইরো কে বাংলা থেকে রাজ্যসভার সাংসদ করে পাঠিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে নিজেদের রাজনৈতিক জমি তৈরি করার জন্য কংগ্রেসের ঘর ভাঙছে। এই ঘটনা স্বভাবতই কংগ্রেসের কাছে একটা অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেছে। এবার রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বারের জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গেছেন। প্রথমবার দিল্লি যে তিনি সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন যাতে করে বিজেপিকে 2024 এ কেন্দ্র থেকে সরানো যায়। এক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বভারতীয় স্টরি বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি আলাপ-আলোচনা চালিয়েছেন। এবারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরে কিছুটা ছন্দ পতন ঘটল। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেস নেতাদের তৃণমূলে যোগদান করা নয় কংগ্রেসের মধ্যে তো একটা চাপা অসস্তি ছিল সেই অস্বস্তি আজ  আরো কিছুটা বাড়িয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা বর্তমান কংগ্রেস নেতা কীর্তি আজাদ। 


এক সময়ে ক্রিকেটের মাঠ কাঁপানো এই ক্রিকেটার রাজনীতির ময়দান ও তিনি তিনি হয়তো কাপাতে পারবে। কিন্তু রাজনীতির ময়দান যে অনেক বেশি জটিল ও কঠিন তা হয়তো কীর্তি আজাদ সহজেই বুঝতে পেরেছেন । রাজনীতিতে কীর্তি আজাদের অংশগ্রহণ ভারতীয় জনতা পার্টির হাত ধরে। বিহারের দ্বারভাঙ্গা লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে কীর্তি আজাদ লোকসভায় আসেন। কিন্তু খুব বেশিদিন বিজেপির সঙ্গে কীর্তি আজাদের সম্পর্ক মধুর থাকলো না। লোকসভার সাংসদ থাকাকালীনই ভারতীয় জনতা পার্টি কীর্তি আজাদকে দল থেকে সাসপেন্ড করে। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কীর্তি আজাদ  ভারতীয় জনতা পার্টি ত্যাগ করে জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করেন।  এবার আর দু'বছর কংগ্রেসে থাকতেপারলোনা কীর্তি। আবার দল পরিবর্তন। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরকালে তার উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন কীর্তি আজাদ। রাজনীতিতে কীর্তির এই যোগ সর্বভারতীয় রাজনীতির বেশকিছু রসায়ন পাল্টে দিয়েছে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর সর্বভারতীয় ক্ষেত্র নিজেদেরকে প্রাসঙ্গিক করে গড়ে তোলার জন্য যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেস কংগ্রেসের ঘর ভাঙছে তাতে করে মমতা ব্যানার্জি বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার প্রদীপ জ্বালাতে চেয়েছেন তা আদৌ কি জ্বলবে। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে হলে কংগ্রেস কে বাদ দিয়ে তা আদৌ করা সম্ভব নয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে কংগ্রেসের ঘর ভাঙছে তাতে করে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের একই জোটে থাকা কি সম্ভব হবে। 

ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস একা নির্বাচন লড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে করে উত্তর প্রদেশের সমাজবাদী জনতা পার্টি ও বহু জন সমাজ পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। অডিও ক্ষেত্রে আদৌ লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি বিরোধী কোনো জোট গড়ে উঠবে কিনা তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। রাজ্য থেকে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতারা কেউই মমতা ব্যানার্জির এই কংগ্রেস কে দুর্বল করার রাজনৈতিক কৌশল কি আদৌ ভালো চোখে দেখছেন না তা বলাই বাহুল্য। 


কোন কোন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে কীর্তি আজাদের বিজেপি থেকে কংগ্রেস হয়ে তৃণমূলে যোগদান রাজনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। কেউ কেউ মনে করছেন যেসব কংগ্রেস নেতারা ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অথবা যোগ দেবেন বলে মনস্থির করেছেন তাদের কংগ্রেসে কতখানি গুরুত্ব আছে তা নিয়ে যথেষ্ট ভাবনা চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের কংগ্রেস ভাঙ্গানো রাজনৈতিক কৌশল যে বিজেপি কে লাভবান করছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। 

২০১৯ এ লোকসভা নির্বাচনে জেতার পর নরেন্দ্র মোদী ডাক দিয়েছিলেন কংগ্রেস মুক্ত ভারত। ২০২১এর বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে কংগ্রেসের ঘর থেকে বার করে নিজের ঘর গোছানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ মনে করছেন বকলমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদির কথাকেই বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। প্রায় সই পশ্চিমবাংলায় বামেরা শ্লোগান দিয়ে থাকে যে রাজ্যে দিদি কেন্দ্রে মোদি দুজনের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। 

সর্বভারতীয় বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি তার রাজনৈতিক কৌশল বদলাবে নাকি এই ভাবেই কংগ্রেসের ঘর ভাঙ্গে বিজেপিকে আবার ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করে দেবে তা সময়ই বলে দেবে।


About Channel: Sothik Barta is a online news channel which covers the entire social media platform. Political, non-political,entertainment, crime, talk show, debate show are present in this channel. It cover different news from different areas, cities and districts news.

Our website:  www.sothikbartaofficial.blogspot.com
Social Media Handles:
Facebook: https://www.facebook.com/sothikbarta/
Youtube : https://www.youtube.com/channel/UCSGK...
Twitter: https://twitter.com/SothikBarta

Comments

Popular posts from this blog

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি