অনাথ আশ্রমের বাচ্চাদের বড়দিনে উপহার প্রদান সান্তা সোহেল আরিজের
নিজস্ব প্রতিবেদন, মুর্শিদাবাদঃ এ গল্পের সান্তা নয়। একেবারে
বাস্তবে নেমে এলো সান্তা ক্লজ রুপে । নাম তার সোহেল রানা আলম। বড়দিন উপলক্ষ্যে বাচ্চাদের
হাতে তুলে দিলেন রকমারি উপহার। সান্তা ক্লজের কাছ থেকে কিছু পাওয়ার আশা থাকে বাচ্চা
থেকে বড়ো সকলেরই। তবে বাস্তবে তা কতটা প্রাসঙ্গিক তা ঠিক জানা নেই।
অর্কিড ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের চেয়ারম্যান
সোহেল সানন্দধাম অনাথ আশ্রমের বাচ্চাদের সামনে হাজির হলেন সান্তা রুপে। ২৫শে ডিসেম্বর
অর্থ্যাৎ বড়দিনের দিন উৎযাপন করতে মুর্শিদাবাদ জেলার এক ছোট্ট গ্রাম সোনা রুপীতে অবস্থিত
এই আশ্রমের ৫০ জন বাচ্চাদের হাতে দিলেন নানা রকম উপহার।
কেউ পেশায় চাকরি করেন। কেউ বা করেন ব্যবসা। নিজেদের ইচ্ছা পুরণে ব্যস্ত আমরা। কিন্তু যারা নিজেদের জীবনে মা বাবাকে পায়নি। পায়নি কারোর আদর , স্নেহ। অবহেলা, লাঞ্ছনা নিয়ে সংগ্রামের সাথে বড় হয়ে ওঠা। সেই রকম বেশ কিছু বাচ্চাদের মুখে হাসি ফোঁটালো সোহেল। জেলার এক প্রান্তে অবস্থিত ছোট্ট একটি গ্রাম; নাম তার সোনা রুপী সেখানে গিয়ে নিজের প্রচেষ্টায় বড়দিনের উপহার তুলে দিলেন সর্বহারা শিশুদের হাতে। সোহেল সান্তার ঝুলিতে ছিলো - টুপি, কেক, চকোলেট, চিপস। আবার মধ্যাহ্নভোজের তালিকায় বাচ্চাদের খুব প্রিয় একটি অন্যতম খাবারের আইটেম চিকেন বিরিয়ানিরও ব্যবস্থাপনা ছিলো। সান্তা সোহেলের একমাত্র ছেলে আরিজ জুবিন আলম ছোট্ট বয়স থেকে বাবার দেখানো পথ অনুসরণ করে জাত-পাত-ধর্ম ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে আনন্দ ভাগ করে নেয়। ছোট্ট আরিজ তার বাবার সহযোগিতা নিয়ে নিজের হাতে সমস্ত উপহার তুলে দেয় এই আশ্রমের বাচ্চাদের হাতে। বাবার অনুপ্রেরণায় অনাথ আশ্রমের বাচ্চাগুলোর সাথে সময় কাটাতে তার বেশ ভালোই লেগেছে বলেও জানায় আরিজ।
প্রতি বছর বড়দিন উৎযাপনে পরিবার ছেড়ে নিজের প্রচেষ্ঠায় সামর্থ্য অনুযায়ী এইভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের অসহায়দের পাশে দাঁড়ান অর্কিড ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের চেয়ারম্যান সোহেল। গত বছর এই দিন উৎযাপনে সান্তা রুপে মৌলালির গরীব বাচ্চাদের হাতে কেক উপহার দিয়েছিলেন তিনি। আবার কখন আমফানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সর্বহারা হয়ে পড়া অসহায় পরিবারের দিকে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন সোহেল। লকডাউনে আর্থিক ভান্ডারে টান পড়লে ডাক পড়েছে সোহেলের। ৭৪ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ৭৪ কেজি ত্রান সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন এই আশ্রমে। তারপর ফের বড়দিন উৎযাপনে একেবারে সান্তার মতো উপহারের ঝুলি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন সানন্দধাম অনাথ আশ্রমে। সঙ্গে ছিলো ছোট্ট সঙ্গী আরিজ।
আশ্রমের সেক্রেটারি অমল কুমার ঘোষ বলেন, পরবর্তীতেও এই
ভাবে সমাজসেবক সোহেলকে তাদের আশ্রমের পাশে থাকার জন্যে এবং তারা যাতে সরকারি ভেবে কোনো
আর্থিক সহযোগিতা পান সেই ব্যাবস্থা করে দিতেও অনুরোধ করেন সান্তা সোহেলকে।
Comments
Post a Comment