শেষ রক্ষা হল না

সৃঞ্চিণী পোদ্দার, বেলঘরিয়াঃ ফের রাজ্যে করোনা মৃত্যু হল আরো একজনের । উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বেলঘরিয়া রথতলার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। নাম সাধন সাধুকা । ৫৭ বছর বয়সী এই ব্যাক্তি আজ সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে করোনা আক্রান্ত হয়ে বেলঘরিয়ার জেনিথ নার্সিংহোমে মারা যান । গত ২৬ তারিখে ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে জেনিথ হাসপাতালে ভর্তি হন এই ব্যাক্তি। ক্রমশ শরীরের অবস্থার অবনতি হওয়ার ফলে তাঁকে ICU তে রাখা হয়। তারপর তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় । গত ৩০ তারিখ শরীরে নমুনা পরীক্ষার জন্যে রক্ত নেওয়া হলে তার রিপোর্ট আসে পজেটিভ। আজ সকালে তাঁর মৃত্যুর খবরে এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে এক বিরাট চাঞ্চল্য ।


বেলঘরিয়ার রথতলার মোড়ে সাধন সাধুকার নিজের  একটি রেষ্টুরেন্ট ছিল। পরিবার সূত্রের খবর , গত এক থেকে দেড় মাস আগে পর্যন্ত তিনি এবং তাঁর স্ত্রী এই দোকানটির দেখাশোনা করেন । বহু দিন ধরেই তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন । জেনিথে তাঁর ডায়ালিসিস চলছিল । গত ২৩ তারিখ থেকে তাঁর শরীর খারাপ ছিল। সূত্রের খবর, ভিন রাজ্যে যাওয়ার অথবা তাঁর বাড়িতে ভিন দেশীয় কারোর আসার কোনো ইতিহাস নেই। তাহলে বেলঘরিয়ায় করোনার সূত্রপাত হল কিভাবে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দপ্তর। করোনায় মৃত্যু হওয়া এই ব্যাক্তির পরিবারের সকলকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ পৌরসভার। আজ সকাল থেকেই এলাকার প্রত্যোকটি বাড়ির সামনে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে । কামারহাটি পৌরসভার তৎপরতায় ইতিমধ্যেই রথতলার সমস্ত গলিতে গলিতে এমনকি করোনায় মৃত্যু সাধন সাধুকার বাড়ির আশেপাশের সকল বাড়িতে পরিশ্রুত জল এবং ব্লিচিং দিয়ে স্যানিটাইজ করে হচ্ছে ।
দুই সন্তানের বাবা বছর ৫৭ সাধন সাধুকা। বড়ো মেয়ে বিবাহিত। পরিবারে সদস্য বলতে তিনি তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর কনিষ্ট কন্যা থাকতেন । পরিবার সুত্রের খবর, এর আগে বাড়ির কোনো সদস্যের জ্বর-সর্দি কিছু হয়নি। তবে কিভাবে নোবেল করোনা ভাইরাস সাধন সাধুকার শরীরে থাবা বসালো সেই বিষয়ে উদ্বিগ্ন হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
গত ৩০শে মার্চ বেলঘরিয়ার জেনিথ হাসপাতাল কতৃপক্ষ এক সাংবাদিক সন্মেলনে জানান যে, হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের জন্যে যথেষ্ট ব্যবস্থা করা আছে। ওই হাসপাতালে সাধন সাধুকাকে ভর্তি করার চারদিন পর করোনা পরীক্ষার জন্যে নমুনা সংগ্রহ করা হয় । এই নিয়ে হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছে তাঁর পরিবারের লোকজন। ভর্তির সময় তাঁর শরীরের অবস্থা পরীক্ষা করে জানানো হয় যে , তাঁর Pneumonia হয়েছে। সেই অনুযায়ী ভর্তি হওয়ার পর থেকে  চারদিন ওই হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসাও হয়।  তাঁরপর ৩১ তারিখ রিপোর্টে জানা যায় , তিনি করোনায় আক্রান্ত। পরিবার সূত্রে , হাসপাতাল কতৃপক্ষের চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠছে।

Comments

Popular posts from this blog

‌বন্যাদূর্গতদের সচেতনতা ‌শিবির

রাজ্যপালের করা রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতার দুই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ

বাঘাযতীন বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল ক্লাবের ৭৫ ভূমি পুজো