নববর্ষের প্রাক্কালে বাঙালিত্বের আদর্শে অনুপ্রাণিত এক অভিনব কর্মসূচি পালন করল 'ঐক্য বাংলা

নিজস্ব সংবাদদাতা , কলকাতা : পয়লা বৈশাখের প্রাক্কালে বাঙালিত্বের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১১-১৪ এপ্রিল আদ্যোপান্ত সামাজিক মাধ্যমে 'নববর্ষ' কর্মসূচি পালন করল বাংলার সর্বপ্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন'ঐক্য বাংলা' 

গৃহবন্দী পরিস্থিতিতে কিভাবে পালিত হলো নববর্ষ

ঐক্য বাংলা সংগঠনের প্রধান মুখ তথা সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতি সুলগ্না দাশগুপ্ত জানান,"একটি অন্যতম প্রধানতম এবং বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ উৎসব। এর বিশেষ তাৎপর্য এর অসাম্প্রদায়িক প্রকৃতি। আমরা ঠিক করেছিলাম এবছর এই অভূতপূর্ব পরিস্তিতিতে পালিত নববর্ষ উপলক্ষে পয়লা বৈশাখ সংক্রান্ত বিভিন্ন রীতি - নীতি - ইতিহাস - ঐতিহ্য বাঙালি জাতির সামনে তুলে ধরবো সামাজিক মাধ্যমে। খাওয়া দাওয়া, নতুন জামা, প্রিয়জনের সাথে মিলন (এবছর হয়তো ফোনে-ফোনেই) এর পাশাপাশি বাঙালির জন্য এটাও জরুরি।" 

কেমন ছিল এই কর্মসূচি
ঐক্যযোদ্ধা দেবায়ন সিংহ জানান, "প্রত্যেকদিনের জন্য একটা বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই বিষয়ের ওপর নানা ভাবে - লেখা , ছবি , সহযোদ্ধাদের ভিডিও ও লাইভ , ইত্যাদি আমরা আমাদের সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করি।" 
বিষয় সম্পর্কে বিশদে বলতে গিয়ে ঐক্যযোদ্ধা অভিজ্ঞান সাহা বলেন , "পয়লা বৈশাখের ইতিহাস , তার রীতি নীতি তথা বাংলার লোকসঙ্গীত ও লোকনৃত্য নির্বাচিত করা হয়েছিল বিষয় হিসেবে । প্রত্যেকদিন আমরা সেই বিষয়ের ওপর নানা ভাবে তথ্য ও ভিডিও তথা লাইভের মাধ্যমে আমাদের সামাজিক মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে জানানোর একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস করেছি ।" 

কিন্তু এত বিষয় থাকতে এই বিষয়গুলোই কেন বেছে নেওয়া হল

ঐক্যযোদ্ধা সৈকত পোদ্দার খুব স্পষ্ট ভাষায় বলেন , " পয়লা বৈশাখ বাঙালির খুব বড়ো একটি উৎসব হলেও এর ইতিহাস , রীতি - নীতি নিয়ে বাঙালি অতটা ওয়াকিবহাল নয় । আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যতটা সম্ভব এই দিকগুলো আমাদের সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরে যাতে বাঙালি জাতিকে এই বিষয়ে  অবগত ও সচেতন করা যায় । " এছাড়াও ঐক্যযোদ্ধা রাজিত বাগ বলেন , " বাংলার লোকসংগীত এবং লোকনৃত্য কিন্তু শুধু কিছু শিল্প নয়। এগুলো আমাদের বাঙালি অস্তিত্ত্বের মৌলিক অংশ। বাঙালির অধিকার আদায়ের লড়াইতে আমাদের শিকড়কে জানা কিন্তু অপরিহার্য। কিন্তু অনেকেই বাংলার লোকসঙ্গীত তথা লোকনৃত্য নিয়ে ওয়াকিবহাল নয়। বাঙালির ঐতিহ্যের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশকে তুলে ধরার জন্যই এই দুটো বিষয়ের ওপরেও আমরা জোর দিয়েছি।" 

কিন্তু মহামারীর বাজারে কতটা মানুষের মন ছুঁতে পারবে এই কর্মসূচি?

ঐক্যযোদ্ধা অভিজিৎ গুহ নিয়োগী জানান, "আমার তো মনে হয় এই বিশেষ সময়ে এই কর্মসূচি আরো বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। সকলেই গৃহবন্দী , সবাই কমবেশি মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত। এই সময়ে বাঙালি জাতির দীর্ঘদিনের রীতি - নীতি - সংস্কৃতি নিয়ে কথা বললে বাঙালির মনে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে । এছাড়াও বাঙালিত্বের পবিত্র আদর্শ বাঙালি জাতির মধ্যে সঞ্চারিত করা যাবে বলেই এই সময়ে এই সময়ে এই কর্মসূচির রূপায়ন করা হয়েছে।" 

কেমন ছিল সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া

ঐক্য বাংলা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতি  সুলগ্না দাশগুপ্তের গলায় ফুটে ওঠে আত্মপ্রত্যয়ের সুর , " সমর্থকরা আমাদের এই কর্মসূচিকে অত্যন্ত সমর্থন করেছে। তারা আমাদের জানিয়েছে এই ধরণের কর্মসূচি থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন এবং অনুরোধ করছেন ভবিষ্যতেও যেন আমরা এই ধরণের কর্মসূচি পালন করি । " 
একের পর এক যে অভিনব কর্মসূচি পালন করছে ঐক্য বাংলা তা সত্যি প্রশংসনীয় । মাত্র দু মাস বয়সী এই মুক্ত পন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন যেভাবে বাঙালি জনমানসে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা অনেক মহলেই সাড়া ফেলে দিয়েছে । এখন দেখার ভবিষ্যতে কিভাবে ঐক্য বাংলা তাদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারে ।

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের