**বাংলা ভাগের বিরোধিতা করে আক্রমণের মুখে ঐক্য বাংলা,
সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভে ফেটে পড়ল বাঙালি**
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: বিগত
কয়েকমাসে সামাজিক মাধ্যমে এবং পথে ঘাটে নানা ধরণের অভিনব কর্মসূচি করে সাড়া ফেলে
দিয়েছে বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন 'ঐক্য বাংলা'। এবার বাংলা ভাগের ঘৃণ্য চক্রান্তের
তীব্র বিরোধিতা করায় আক্রমণের মুখে পড়তে হল ঐক্য বাংলাকে।
ঘটনার শুরু কোথা থেকে? কীভাবেই বা বাংলা
ভাগের চক্রান্তের প্রতিবাদ জানালো ঐক্য বাংলা?
ঐক্য বাংলা সংগঠনের প্রধান মুখ তথা সাধারণ সম্পাদিকা
শ্রীমতি সুলগ্না দাশগুপ্ত জানান , " আপনারা সকলেই জানেন
ভারতবর্ষের বুকে় বিভিন্ন সময় উত্তর পূর্বের রাজ্যে বাঙালি বিদ্বেষীরা কিভাবে
বাঙালির ওপর নির্মম ভাবে অত্যাচার করে এসেছে এবং
বর্তমানেও অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাঙালি জাতিকে খেদানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
সাম্প্রতিককালে সামাজিক মাধ্যমে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা
উত্তরবঙ্গ কে একটি আলাদা রাজ্য বানানোর দাবি তুলেছে তাও আপনারা জানেন। এই বাতাবরণে
বিগত কয়েকদিন ধরে আমরা 'ঐক্য বাংলা' এই
বাঙালি বিদ্বেষীদের মনোভাব বাঙালির সামনে তুলে ধরি সমস্ত তথ্য প্রমাণসহ।
উত্তর-পূর্বের অধিবাসীদের একাংশ কিভাবে সরাসরি লিখিত আকারে সমগ্ৰ উত্তর পূর্ব ভারত
থেকে বাঙালি বিতাড়নের ডাক দিচ্ছেন, বাংলা ভাগের কথা বলছেন
ইত্যাদি তার জলজ্যান্ত প্রমান আমাদের সামাজিক মাধ্যমের ফলোয়ারদের সামনে তুলে ধরা
হয়।"
উপরোক্ত পোস্টগুলি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। এই পোস্ট
গুলোর কমেন্ট সেকশনে উত্তর পূর্ব ভারতের কিছু ব্যক্তি সহ নেপালি গোর্খা বিহারি প্রভৃতি
বিভিন্ন বহিরাগত নামধারী ব্যক্তি চূড়ান্ত গালিগালাজ করতে থাকেন। "বাঙালি =
বাংলাদেশি" এই চূড়ান্ত জাতিবিদ্বেষ পূর্ণ ঘৃণামূলক বার্তা তারা ছড়াতে
থাকেন।
ঐক্য যোদ্ধা রাজিত বাগ জানান, "জনৈক আলিপুরদুয়ারবাসী নেপালী নামধারি বাঙালি বিদ্বেষী ব্যক্তি বহুদিন ধরে
বাংলা ভাগ সমর্থন করে পোস্ট করে যাচ্ছেন। বাংলার নাকি আলাদা রাজ্য হিসেবে থাকারই
কোন প্রয়োজন নেই - এই মর্মে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করে যাচ্ছেন। এছাড়া একজন
ঐক্য বাংলার সমর্থক বাঙালি ভাই বোনদের তিনি বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে
সামাজিক ঘৃণা তৈরি করছেন। ঐক্য বাংলা এই ধরনের বাঙালি বিদ্বেষী চক্রান্তকারীদের
ছেড়ে দেয় না। এজন্যই আমরা সামাজিক মাধ্যমে এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।"
ঐক্য বাংলার বিরুদ্ধে উত্তরবঙ্গের মানুষদের চাইনিজ
আখ্যা দেবার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে ঐক্য যোদ্ধা দেবায়ন সিংহ জানান,"আমরা উত্তরবঙ্গের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে চাইনিজ বা এরকম কিছু আদৌ বলিনি।
বহিরাগত নেপালি গোর্খা এরা বাংলার কেউ না। ভারতেরও কেউ না। আমরা জাতিবিদ্বেষ
বিশ্বাস করিনা, কিন্তু তাও জানিয়ে রাখি, এই বহিরাগত জাতিগুলির কাউকে চাইনিজ বললে তার শাস্তি আছে কিন্তু বাঙালিদের
বাংলাদেশী বললে তার কোনো শাস্তি নেই।"
ঘটনা আরো ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ঐক্য যোদ্ধা অভিজিৎ
সরকার বলেন ,"এই চূড়ান্ত বিদ্বেষমূলক প্রচারকে কেন্দ্র করে ঐক্য
বাংলার একজন সদস্যের সেই আলিপুরদুয়ারবাসী নেপালী
নামধারি ব্যক্তির সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং সেখানে আমাদের সংগঠনের সদস্যকে
বাঙালি জাতি তুলে ক্রমাগত অপমান করা হয়। বাংলা ভাগ করতে চাওয়া বাঙালি জাতির
প্রতি তীব্র ঘৃণা পোষণ করা এই বহিরাগত জানোয়ারের বক্তব্য সমস্ত তথ্য প্রমাণসহ
আমরা গতকাল রাত্রেই প্রকাশ করি। "
দেবায়ন আরো জানান সেই বাঙালি বিদ্বেষী ব্যক্তি এবং তার সম-মনস্ক বন্ধু - বান্ধব মিলে ঐক্য বাংলা সংগঠনের ফেসবুক পেজটিকে ওড়ানোর জন্য ক্রমাগত রিপোর্ট, নেতিবাচক
রেকমেন্ডেশন ইত্যাদি করে চলেছে।
তাহলে এই ব্যাপারে ঐক্য বাংলার পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত আত্মপ্রত্যয়ের সাথে জানান, "এইভাবে আমাদের প্রতিবাদ থামিয়ে রাখা যাবে না। ঐক্য বাংলা কে না, আর বাঙালি কেও না। আপনাদের জানিয়ে রাখি যেভাবে আমাদের সমর্থক কূল আমাদের
পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, যতটা সম্ভব বাংলা ভাগের চক্রান্তের
বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, তা আমাদের আপ্লুত করেছে।
বাঙালি জাতি যেখানেই লাঞ্ছিত - অপমানিত হবে আমরা 'ঐক্য বাংলা
' সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়াব এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা,
আর বাঙালি জাতি আমাদের সাথে থাকবে সেটাও আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।"
বারংবার যখন উত্তর পূর্বে বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার
হয়েছে , পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি একতার অভাবে চুপ করে থাকতে বাধ্য
হয়েছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে যেভাবে মাত্র দেড় মাস বয়সী এই
মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন বাংলা ভাগ, উত্তর-পূর্বে
বাঙালির ওপর অত্যাচার এবং বাঙালিকে রাষ্ট্রহীন করার সুগভীর চক্রান্ত এর প্রতিবাদে
গর্জে উঠে সাড়া ফেলে দিয়েছে তাই সত্যিই তারিফযোগ্য।
Comments
Post a Comment