ভবানীপুরে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা তিব্রেওয়ালের জীবনকথায় কলমে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৌগত দত্ত


প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল , নামটা আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে সংবাদমাধ্যমগুলির শিরোনামে শিরোনামে ঘোরাঘুরি করলেও  বাংলার মানুষের কাছে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল মানে , সন্ত্রাস আর রাজনৈতিক হিংসার ভয়ংঙ্কর  অন্ধকারে আলোর দিশাপ্রদানকারী এক অভয়দায়িনী মাতৃরূপের জীবন্ত প্রতিমা । আজ যে CBI এর উপর ভরসা করে ভোট পরবর্তী হিংসার খুন , জখম , ধর্ষণ ও সম্পত্তি লুঠের নিরপেক্ষ তদন্তের আশা দেখছেন বিরোধী শিবির তথা হাজার হাজার সাধারণ মানুষ , তার রূপকার এই প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল । তিনি‌ নিপীড়িত মানুষের হয়ে মামলা না লড়লে হয়তো আজ এতদিন পুলিশি দলদাসত্বের চক্রান্তে চাপা পড়ে যেত ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে মানুষের হাহাকার - আর্তনাদ । তাই হয়তো এখন ওনার রাজনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে ছবির তুলনায় লড়াকু আইনজীবীর ছবিটাই প্রতিটি  বাংলার মানুষের মনে গেঁথে গেছে । কিন্তু এই লড়াকু আইনজীবীর জীবনের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলেই ,দেখা মিলবে  তাঁর কর্তব্যপরায়ন কর্মজীবনের সাথে সাথে অত্যন্ত নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক চরিত্রের সত্ত্বার । 


সালটা 1981 , 16 ই জুলাই, তখন কলকাতার বুকে জন্মানো এক কন্যা যে আজ বাংলার মানুষের মন জয় করে বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ পরিবর্তনকারী এক শিক্তিতে পরিণত হবে , তা তখন‌ কেই বা ভেবেছিল ?  কলকাতার গোল্ডস্মিথ স্কুলে ছাত্রীজীবনের শুরু হয়েছিল । পরবর্তীতে হাজরা law কলেজ থেকে law ডিগ্রি  এবং থাইল্যান্ডের  অ্যাসাম্পশন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে HR নিয়েও MBA করেছিলেন তিনি । সেই ছাত্রী জীবনের শুরু থেকে ইংরেজি দৈনিক সংবাদ , ' দ্য টেলিগ্রাফ ' -এ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লেখা ছিল তাঁর নেশা । আইনজীবী হিসেবে তাঁর পথ চলা শুরু হয়েছিল 2007 সালে । অল্প সময়ের মধ্যে কলকাতা হাইকোর্ট তথা ভারতের সুপ্রিম কোর্টের অন্দরমহলে আইনজীবী হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পরতে শুরু করেছিল । তখনই খুব সম্ভবত মাননীয় বাবুল সুপ্রিয় মহাশয়ের অনুপ্রেরণাতেই তাঁর  ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান । যদিও রাজনীতিতে প্রবেশের আগেই তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থা ও পঠন-পাঠনের উন্নতিসাধনের জন্য একনিষ্ঠভাবে অনেক কাজও করেছিলেন । অবশেষে 2014 তে তাঁর ভারতীয় জনতা পার্টিতে অভিষেকের পর অতিশীঘ্রই তিনি তৎকালীন বিজেপির একজন সক্রিয় সেনাপতি হয়ে ওঠেন । 2015 সালে যখন কলকাতা পৌরসভা নির্বাচন হয় তখন 58 নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে তিনি সর্বপ্রথম নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন । সেইসময়ের এক অসম লড়াই -এ বিজেপি জিততে না পারলেও তাঁর লড়াকু মনোভাব আর অদম্য প্রাণশক্তি দেখে সংগঠন থেকে তাঁকে 2020 সালে ভারতীয় জনতা যুবমোর্চার ভাইস - প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব প্রদান করা হয় ।  শুধু তাই নয়,  কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিজেপির জাতীয় মুখোপাত্র হিসেবে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমগুলিতে এক পরিচিত মুখ হিসেবে উঠে আসতে থাকেন প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল । এবারের বিধানসভা নির্বাচনের মহাযুদ্ধে এন্টালি বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থী স্বর্ণকমল সাহার বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেন । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ছলে -বলে -কৌশলে তাঁকে এবং বিজেপিকে পরাজিত করা হয় । তারপরেই যখন রাজ্যজুড়ে ভয়ংকর রাজনৈতিক হিংসার কবলে পড়ে রাজ্যবাসী , পুলিশ প্রশাসন যখন নীরব দর্শক তখনই ত্রাণকর্তারূপে এক বলিষ্ঠ আইনজীবীর ভূমিকায়  অবতীর্ণ হন প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল । শাসকদলের চোখরাঙানি , অর্থবল, লোকবল সবকিছুই আজ একপ্রকার  হার মানতে বাধ্য হয়েছে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়ালের নেতৃত্বে । আইনের শাসনের পরিবর্তে  শাসকের আইনকে একপ্রকার  সমর্থন করেই  যখন  কোটি কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে যাওয়া সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীরা  এই গনহত্যার কান্ডারীরূপী  শাসকদলকে আইনি ছত্রছায়ার সুরক্ষায় আনার জন্য মরিয়া হয়ে পরেছিলেন ,তখন তঁদেরকে হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে আইনের পাঠ পড়িয়েছিলেন এই প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল দিদি । এভাবেই হারিয়ে যাওয়া গনতন্ত্রের বুকে আইন-আদালতের প্রতি মানুষের ভরসাকে ধরে রাখার সংগ্রামের নামই হচ্ছে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল , শাসকের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করে চোখে চোখ রেখে লড়াই -এর শক্তি -উৎসের নামই‌ হচ্ছে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল , স্রোতের বিপরীতে চলতে শিখে শক্ত হাতে হাল ধরে রাখার সেই প্রেরণার নামই হচ্ছে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল , এবং সর্বোপরি আজ বঙ্গবিজেপিতে হাজার হাজার অসহায় বিজেপি কর্মী থেকে শুরু করে রাজ্যে শাসকদলের অত্যাচারে অত্যাচারিত সাধারণ মানুষজনের রক্ষাকারিনী মাতৃস্বরূপ এই প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল । 


আইনি লড়াই -এ পরোক্ষভাবে  শ্রীমতী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়ালের কাছে  প্রায় হেরে যাওয়ার পর এখন দেখার বিষয় , প্রাক্তন অস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি পারবেন তাঁর নিজের কেন্দ্রের রাজনৈতিক লড়াইয়ে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল কে পরাজিত করতে ?( প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই দুজনেই কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের রাজনৈতিক লড়াইয়ে হেরে যাওয়া মহিলা প্রার্থী ) 

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের