মহানায়কের ৯৫ তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য
বাংলা চলচ্চিত্রকার নিতিন বসু পরিচালিত "দৃষ্টিদান" ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন উত্তম কুমার। তবে সেই রকম সফলতা না পেলেও বসু পরিবার চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পর উত্তম কুমার অভিনেতা হিসেবে দর্শকদের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর সুচিত্রা সেনের বিপরীতে "সাড়ে চুয়াত্তর" ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে দর্শকদের কাছে একটি জনপ্রিয় জুটি হয়ে ওঠে উত্তম-সুচিত্রা।
একে এক "হারানো সুর", "সপ্তপদী", "পথে হলো দেরি", "চাওয়া পাওয়া", "বিপাশা", "জীবন তৃষ্ণা" - বহু এরকম ছবিতে উত্তম-সুচিত্রা জুটি দর্শকদের মনে দাগ কেটে যায়। পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে উত্তম-সুচিত্রা অভিনীত চলচ্চিত্র দর্শকদের কাছে বিপুল পরিমাণ সাড়া ফেলে দেয়। যা তৎকালীন সময়ে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে ব্যাবসায়িক সফলতা এনে দিয়েছিল।
কেবলমাত্র বাংলা চলচ্চিত্র জগতে উত্তম কুমার একজন জনপ্রিয় অভিনেতা ছিলেন তা নয়। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি চলচ্চিত্রেও তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। "ছোটিসি মুলাকাত" "আনন্দ আশ্রম", "অমানুষ" - এই ধরনের বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে একজন প্রিয় অভিনেতা হয়ে ওঠে উত্তম কুমার। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত "নায়ক" এবং "চিড়িয়াখানা" ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্রে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্রে ব্যোমকেশ বক্সীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার।
বহু চলচ্চিত্রে উত্তম কুমার অভিনয় করলেও একজন অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে যথেষ্ট সময় লেগেছিল তার। এন্টনি ফিরিঙ্গি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজের অভিনয়ের প্রতি দক্ষতা প্রমাণ করেছিলেন মহানায়ক।
রোমান্টিক হিরো বলে দর্শকদের মনে সবসময় জায়গা করে নিয়েছে উত্তম কুমার । তবে এছাড়াও ভিন্ন চলচ্চিত্রে বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে , শ্যামল মিত্র - এই সমস্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পীদের গাওয়া গানে সবথেকে বেশি ঠোঁট মিলিয়েছেন মহানায়ক।
চলচ্চিত্র জগতে যার অবদান অপরিসীম তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মহানায়ক উত্তম কুমার। তাই সন্ন্যাসী রাজার নামকরণে কলকাতা মেট্রো টালিগঞ্জ অঞ্চলের নামাঙ্কিত করা হয় "মহানায়ক উত্তম কুমার মেট্রো স্টেশন"।
১৯৫৭ সালে অজয় কর পরিচালিত 'হারানো সুর' ছবিতে সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করে উত্তম কুমার সারা দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন একজন অভিনেতা হিসেবে। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য রাষ্ট্রপতির "সার্টিফিকেট অফ মেরিট" এ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। এছাড়াও ১৯৬৮ সালে এন্টনি ফিরিঙ্গি এবং চিড়িয়াখানা ছবিতে অভিনয়ের জন্য পৃষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন। এরপর ১৯৬১ সালে দোসর ছবিতে অভিনয়ের জন্য আবারও শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।
Comments
Post a Comment