করোনা আক্রান্ত না হয়েও ৫দিন থাকতে হলো করোনা রোগীদের সাথে 
কলকাতাঃ কোভিড নিয়ে আরও এক দুঃখজনক অভিজ্ঞতা । এই কলকাতা শহরের বুকেই।  Medinova Diagonistic থেকে কোভিড টেস্ট করেছিলেন বেহালা নিবাসী  মেধাবী তরুণী গবেষক।  বরানগরের  আইএসআই এর পিএইচডি ছাত্রী। বয়স ২৭/২৮ বছর । তার একটা ছোট টিউমার অপারেশন হওয়ার কথা। ডাক্তার বললেন অপারেশনের আগে রুটিন মাফিক কোভিড টেস্ট করাতে হবে। যদিও  কোন ধরণের কোন লক্ষণই ছিল না। না জ্বর,  না কাশি, না শ্বাসকষ্ট, না গলা ব্যথা। কিচ্ছু না। তবুও Medinova Diagonistic তাঁকে কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট  দিল। গত শুক্রবার ২৬ জুন। অকস্মাৎ এই সংবাদে আকাশ ভেঙে পড়ল গোটা পরিবারের মাথায়। কেউ ভাবতেও পারেনি এরকম হতে পারে। কিন্তু কী আর করা। 
রইল পড়ে অপারেশন। একমাত্র সন্তান। পরিচিত কোন ডাক্তারই হোম কোয়ারাইন্টাইনের দায়িত্ব নিতে চাইল না। সবাই বললো রিস্ক নেওয়া যাবে না। ফলত রিপোর্ট নিয়ে দৌড়াল কোভিড হাসপাতালে। ভর্তি হল বেলেঘাটার আই ডি হাসপাতালে।শুরু হল পরীক্ষানীরিক্ষা। কিন্তু কিছুতেই কিছু হল না। সব ব্যর্থ। কোন উপসর্গ দেখা দিল না। পাওয়া গেল না কোভিড।পাঁচ দিন পার। কোভিড কই! Medinova-র কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে পাঁচদিন আইডি হাসপাতালে কাটিয়েও কোন উপসর্গ পাওয়া গেল না। আইডি-র  বারবার রক্ত পরীক্ষা, এক্সরেতেও  কিছু পাওয়া গেল না। অবশেষে ৫দিন পরে গতকাল, ৩০জুন মঙ্গলবার, আইডি ঐ ছাত্রীকে ছুটি দিয়ে দিল। 
আর মেয়েটি ৫ দিন ধরে থাকলেন হাসপাতালে ২০/২৫ জন কোভিড রোগীর সঙ্গে। ব্যবহার করলেন একই শৌচাগার, স্নানঘর। অথচ তার কোভিড সংক্রমনের চিহ্নমাত্র  পায়নি শহরের সেরা কোভিড হাসপাতাল। তাহলে Medinova Diagonistic পজিটিভ রিপোর্ট দিল কী করে?  এটাই হল কোটি কোটি টাকার প্রশ্ন। মাত্র কয়েকদিন আগেই কলকাতার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রাইভেট  ডায়গনিস্টিক সেন্টারগুলিতে প্রায় ১০০ শতাংশ রিপোর্টই পজিটিভ আসছে। এটা হতে পারে না। তিনি বলেছিলেন তাঁরা এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। তারপর সব চুপচাপ! প্রাইভেট সেন্টারগুলির কোভিড পরীক্ষার ব্যবসা রমরমিয়ে চলছে। কিন্তু ৫দিন ধরে দিবারাত্রি এতজন কোভিড রোগীর সঙ্গে থেকে মেয়েটি যদি এখন সত্যিই কোভিড আক্রান্ত হন তার জন্য কে দায়ী হবে? পাঁচদিন ধরে মেয়েটি যে শারীরিক মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছে, এক মাত্র সন্তানকে নিয়ে মা-বাবা যে মানসিকভাবে কষ্ট ভোগ করলেন । তারজন্য কে  শাস্তি পাবে? Medinova-র এই  রিপোর্ট  নিয়ে সরকার কী পদক্ষেপ নেয় সেটাও দেখার। আর কাউকে যেন ভয়ানক এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে না হয়। জানিনা, সরকার আর কবে নিয়ন্ত্রণ করবে এই বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লোভ-লালসাকে! মানুষের সহ্যের সীমা কিন্তু অতিক্রম করে যাচ্ছে।
সংগৃহীত

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের