মৃত্যুর ৭ঘন্টা কেটে গেলেও করোনায় আক্রান্ত ব্যাক্তির সৎকার হলো না 
নিজস্ব প্রতিবেদন,গাউলিয়াঃ টানা ৭ ঘন্টা কেটে গেলেও করোনায় মৃত ব্যাক্তির সংকারে কেউ এগিয়ে এলেন না। গাউলিয়া পৌরসভার অন্তর্গত ১ নম্বর ওয়ার্ড শান্তিগর এলাকার বাসিন্দা গত ১০-১২ দিন ধরে করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে নির্দেশ দেয়।তবুও নিজের সিদ্ধান্তে বাড়িতেই অক্সিজেন আর প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র নিয়ে ছিলেন।বছর ৭৫ এর বৃদ্ধ নাম সুধীর কুমার দত্ত তার স্ত্রী , অবিবাহিত মেয়ে ,ছেলে এবং বউমাকে নিয়ে একই বাড়িতে ছিলেন। আজ থেকে ১০-১২ দিন আগে সুধীর বাবুর রিপোর্ট কোভিড ১৯ পজেটিভ আসার পরে দু'একবার এলাকা স্যানিটাইজ করা হলেও পরিবারের বাকি সদস্যের কোনো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়নি।
দিনের পর দিন শরীরের অবনতি হতে থাকলেও হাসপাতালে যেতে নারাজ ছিল সুধীর বাবু। এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলার খোঁজ খবর রাখেন এতদিন তার এবং তার পরিবারের। পাড়ার লোকজনেরাই গেটের বাইরে তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এনে দিয়ে যেত। পরিবারের সকলকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয় পৌরসভার পক্ষ থেকে। আজ দুপুর ১টা নাগাদ বাড়িতেই মারা যান করোনা আক্রান্ত সুধীরবাবু। পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় থানায় খবর দিলে মারা যাওয়ার পর কিছুক্ষণ সময় পর্যন্ত গেটের বাইরে পুলিশ প্রশাসন থাকলেও তারপর তারাও আস্তে স্তে বেপাত্তা হয়ে যান। মৃতদেহ সৎকারের জন্যে না পাওয়া যায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স । না পাওয়া যায় পৌরসভার কাউকেও। গতকাল তার ছেলে এবং বউমাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরএনটেগর হাসপাতালে ভর্তি হন। বউমার শরীরের অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায় তাঁকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ছেলে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। টানা ৭ ঘন্টা কেটে গেলেও বাড়িতে মৃতদেহ নিয়ে বসে থাকতে হলো পরিবারের সদস্যদের। প্রত্যেকে পিপিই কিট পড়ে মৃতদেহ সৎকারের চেষ্টা করছেন। গাউলিয়া পৌরসভায় বারংবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো উত্তর মেলেনি। স্থানীয় থানা প্রশাসন গা ঝেড়ে ফেলেছেন। তার বেশ কয়েক ঘন্টা পড়ে ভাটপাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে এলাকাটী সম্পূর্ণ স্যানিটাইজ করে দেওয়া হয়। করোনায় মৃত ব্যাক্তিকে বাড়িতে রেখে তাদের বাড়িও স্যানিটাইজ করে দেয়। অথচ এতেও গাউলিয়া পৌরসভা নিরব।
ফের স্থাস্থ্য ব্যবস্থার হালচাল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ এলাকার মানুষজনের। ব্যাক্তিটি মারা যাওয়ার বেশ কয়েক ঘন্টা পর এলাকা স্যানিটাইজ হলো ঠিকই, করোনা ব্যাক্তির সৎকারের সঠিক ব্যবস্থাপনা এত পরে হলো। এতে সংক্রমণ আরো ছড়াতে পারে।
করোনা ঠেকাতে দফায় দফায় লকডাউন চালু হচ্ছে সারা রাজ্য জুড়ে আর আরেকদিকে করোনা রোগীর মৃত্যু ঘটলে তাঁকে সৎকারের জন্যে নেই কোনো বিশেষ ব্যবস্থা। পৌরসভার বেহাল দশা ফাঁশ হওয়ার ভয়ে ছবি তুলতে বাঁধা দেওয়াও হয়। 

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের