প্রতিশ্রুতি পালন করছে সরকার ; আমরা কথায় বিশ্বাসী না, কাজে বিশ্বাসী : মানিক

 


বানীব্রত দত্ত, ত্রিপুরা: "আমরা কথায় বিশ্বাসী না, কাজে বিশ্বাসী" এই দিশাতেই ভাৱতেৱ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজী'র আদর্শকে সামনে রেখে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা এিপুৱা রাজ্যের প্রতিটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার নিয়েই "প্রতি ঘরে সুশাসন" অভিযান কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী ডা: মানিক সাহা


প্রতিশ্রুতি পালন করছে সরকার। সামাজিক ভাতা যা আগে ৭০০ টাকা ছিল, ২০১৮ তে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার আসার পর সেটাকে বৃদ্ধি করে ১০০০ টাকা করা হয়েছিল। আজ যশস্বী প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জীর জন্মদিনের এই শুভ দিনে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে যে, সামাজিক ভাতা ১ হাজার টাকা থেকেও বৃদ্ধি করে ২০০০ টাকা করা হবে এবং তার বাস্তবায়ন এই মাস থেকেই শুরু হবে।


তথ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, 2018 সালের পর থেকে ত্রিপুরায় জল জীবন মিশন প্রকল্পেৱ 54% কাজ শেষ হয়ে গেছে। এতে রাজ্য সরকার সফলতাও অর্জন করেছে।


এদিকে সংবাদেৱ সত্যতা যাচাই করতে গেলে দেখা যায়, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দিতে মিশন মুডে কাজ করছে সরকার। যদিও সরকার ঢক্কানিনাদে এই প্রচার করলেও বাস্তবে তা আদৌও সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞদের রাজ্য সফরের পর। ২০১৯ সালে শুরু হওয়া কেন্দ্রের জলশক্তি অভিযান প্রকল্পে রাজ্য সরকারের কাজকর্ম দেখতে রাজ্যের ৮ টি জেলায় বিশেষজ্ঞদের পাঠান কেন্দ্রীয় জলসম্পদ দপ্তর। 


ভারত সরকারের জলশক্তি মন্ত্রনালয়ের অধীন পুণের কেন্দ্রীয় জল ও শক্তি গবেষণা স্টেশনের বিজ্ঞানী - সি বিএল মীনা ও দিল্লিতে কর্মরত যতীন নারোয়াল নামে এক আইপিএস অফিসার গোমতী জেলার জলশক্তি মিশনের কাজ দেখে রীতিমত বিরক্ত। বৃষ্টির জল ধরে সংরক্ষণ করে মানুষের জলের সমস্যা সমাধান করা জলশক্তি অভিযান' র মূল লক্ষ্য হলেও গোমতী জেলায় কোন কাজই হয়নি বলে সাফ জানান বিএল মীনা। 


মীনা বলেন, জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সাধারণত বৃষ্টি হয় এই অঞ্চলে। মানুষের বাড়িঘর ও সরকারী অফিসেও বৃষ্টির জল আটকে রাখার ব্যবস্হা করার জন্যই কেন্দ্রীয় জলসম্পদ দপ্তর এই প্রকল্প হাতে নিয়েছিলো। গোমতী জেলার করবুক মহকুমার ডম্বুর জলাশয়ের আশপাশের পাহাড়ি জনপদ গুলি ঘুরে তারা বৃষ্টির জল ধরে রাখার একটিও প্রকল্প দেখতে পাননি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তাদের পছন্দমত জেলার যে সমস্ত গ্রামীন এলাকায় নিয়ে গেছেন সর্বত্রই পানীয় জলের সংকট দেখেছেন তাঁরা। বিএল মীনা ৩ দিনের পরিদর্শন শেষে পুণে ফেরার পথে জানান, তাদের সফরের প্রথম দিনে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে কাগজপত্রে অনেক সাফল্যের কথা তাদের শোনানো হলেও বাস্তবে তার কিছুই মিল পাননি তাঁরা - স্পষ্ট জানান জল বিজ্ঞানী বিএল মীনা৷ জলশক্তি অভিযানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা মানুষকে জানাতে জেলা শাসকের অফিসে একটি ইনফরমেশন সেন্টার খোলার কথা থাকলেও গোমতীর জেলা শাসকের অফিসে তাও খোলা হয়নি বলে অভিমত মীনাৱ।


স্বাধীনতার ৭৫ বছর আজাদী কা অমৃত মহোৎসব হিসাবে পালিত হচ্ছে দেশজুড়ে। স্বাধীনতার ৭৫ বছরের স্মারক হিসাবে দেশের প্রতিটি জেলায় ৭৫ টি অমৃত সরোবর তৈরি করার কথা। ৭৫ টি সরোবরের মধ্যে একটি সরোবরে ১৫ আগষ্ট স্বাধীনতা দিবসের সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার নির্দেশ জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ গোমতী জেলায় একটি নতুন সরোবর তৈরি করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। ৭৫ টি সরোবরের জায়গা চিহ্নিত হয়েছে বলে গোঁজামিল হিসেব দিতে উদয়পুর শহরে অর্ধেক সংস্কার হওয়া জগন্নাথ দীঘি দেখিয়ে দেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা৷ জগন্নাথ দীঘি দেখার পর কেন্দ্রীয় সরকারের দুই আধিকারিক জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে জানতে চান উদয়পুর শহরের মানুষের কি জলের সংকট রয়েছে? 


 যেই সব জায়গায় মানুষের জল সংকট রয়েছে সেই সব জায়গায় তৈরি করতে হবে জলাশয়গুলি। পুনেরম কেন্দ্রীয় জল ও শক্তি গবেষণা স্টেশনের বিজ্ঞানী বিএল মীনার বক্তব্য, বৃষ্টির জল ধরে সংরক্ষণ করে পাহাড়ের মানুষের কাছে সহজেই পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া যায়। গোমতী জেলায় জলশক্তি অভিযান প্রকল্পে বৃষ্টির জল ধরে সংরক্ষণ করার দ্রুত উদ্যোগ নিতে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের পরামর্শ দিয়ে যান তিনি। 


বৃষ্টির জল ধরে সংরক্ষণ করে পাহাড়ে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া যতটা সহজ গভীর নলকূপ বসিয়ে বা অন্য পদ্ধতিতে পাহাড়ে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া বেশ জটিল বলে মনে করেন রাজ্যের পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তরে কর্মরত একাংশ আধিকারিকও।

Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের