রাজ্য সরকারকে দিতে হবে জরিমানা

 

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ বর্জ্য পদার্থ নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ রাজ্য সরকার। তার জেরে রাজ্য সরকারকে জরিমানা করল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। ৩৫০০ কোটি টাকা এবার জরিমানা দিতে হবে রাজ্যকে। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের দাবি, নিকাশি প্রণালীকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না রাজ্য  সরকার। ২০২২-'২৩ অর্থবর্ষের বাজেটে নগর এবং পৌরসভা এলাকার উন্নয়নের জন্য ১২ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও পরিবেশ রক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি রাজ্য সরকার। তাই এবার জরিমানা বাবদ গুনতে হবে তিন হাজার পাঁচশো কোটি টাকা।

যেকোন কিছুর মূল বা প্রকৃত রূপ বা অবস্থা, মূল বা প্রাথমিক পদার্থ নিয়েই প্রকৃতি। চারিদিকে ঘাস, গাছ পালা। আর পর্যাপ্ত পরিমান জলাশয়। আর নিয়েই একটি প্রকৃতির স্বাভাবিক বর্ননা। তবে আধুনিকতার ধাঁচে সেজে উঠছে প্রকৃতি। দিনে দিনে সবুজ লোপাট হচ্ছে বড় বড় অট্টালিকা কিংবা কারখানার গ্রাসে। প্রকৃতি হয়ে উঠেছে বিবর্নময়। এর পাশাপাশি প্লাস্টিক হোক কিংবা যে কোনো বর্জ্য পদার্থ এখানে ওখানে ফেলার জেরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নিকাশী নালা। ফলে দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য। বাড়ছে দুষনের পরিমানও। যা ভবিষ্যতে বড় সমস্যার কারন হয়ে দাঁড়াবে সমাজের কাছে।

 

ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাই ব্যুনালের চেয়ারপার্সন বিচারপতি এ.কে. গোয়েল এই বিষয়ে বলেছেন, সাংবিধানিক ভাবে নাগরিকদের জন্য দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব রাজ্যের। দূষণমুক্ত পরিবেশে প্রাণ খুলে শ্বাস নেওয়া নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। টাকার অভাব । এই ছুঁততে তা থেকে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করা যায় না। 

তাই ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাই ব্যুনালের কথায়, "পরিবেশের ক্ষতিসাধন রুখতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি, এতদিন যেই খামখেয়ালি হোক এবং সংবিধান না মানার জেরে মাশুলও দিতে হবে রাজ্যকে। তাই জরিমানা করা হচ্ছে।" এর পরও ঢিলেমি চোখে পড়লে, অতিরিক্ত জরিমানাও করা হবে বলে জানিয়েছে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাই ব্যুনাল।

 

কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক ২০১৬ সালের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইনের আওতায় প্লাস্টিক প্যাকেজিং-এর উপর বর্ধিত উৎপাদকদের দায়বদ্ধতার বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে। একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রীগুলি চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত উৎপাদকদের দায়বদ্ধতার বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়ছে। এই নির্দেশিকা বর্ধিত প্লাস্টিক প্রস্তুতকারকদের দায়বদ্ধতার আওতায় সংগৃহীত প্লাস্টিক প্যাকেজিং বর্জ্যের পুনর্ব্যবহারকে ন্যূনতম করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একইভাবে প্লাস্টিক ব্যবহার আরও কমানোক্ষেত্রে আজ থেকে ৬ বছর আগেই তৎপর হয়েছিলো কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক। রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে ২০১৬ সালের এই বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সঠিক প্রণয়ন হচ্ছে কি না, সেই দিকে নজরদারি রাখার ফলেই বাংলায় বর্জ্য পদার্থ নিয়ন্ত্রনে সব থেকে বেশি খামখেয়ালি নজরে এসেছে বলে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাই ব্যুনাল সুত্রে খবর। তার জেরে তাদের হাতে রিপোর্ট জমা পড়ে। তার পরই এমন নির্দেশ।



ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাই ব্যুনালের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের শহর এলাকায় দৈনিক ২ হাজার ৭৫৮ মিলিয়ন লিটার বর্জ্য উৎপাদিত হয়। কিন্তু এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্যের মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৫০৫ মিলিয়ন দৈনিক শোধনের পরিকাঠামো রয়েছে। কিন্তু রোজ বর্জ্য পরিশোধন করা হয় ১ হাজার ২৬৮ মিলিয়ন লিটার। বাকি ১ হাজার ৪৯০ মিলিনয় লিটার বর্জ্য পরিশোধনের কোনও ব্যবস্থায় করা হয় না রাজ্য়ে। রাস্তার যত্রতত্র পড়ে থাকছে নোংরা, আবর্জনা। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে নিকাশীনালাও। সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক কতৃব্য। সেই অধিকার থেকে কেন বঞ্চিত হবেন সাধারণ মানুষ। রাজ্যের গাফিলতিতে যথেষ্ঠ ক্ষতি হচ্ছে মানবসমাজ তথা মানব জীবনও। আর এইভাবে চলতে পারে না। দিনের পর দিন ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাই ব্যুনালের রিপোর্টে এসেছে রাজ্যের বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার ছবি। আর তাই এবার জরিমান দিতে হবে রাজ্যকে ।


Comments

Popular posts from this blog

বঙ্গ গৌরব উৎসব সম্মান পেলেন মৌসুমী দাস

বেলঘরিয়া থানার পুলিশের উদ্যোগে উদ্বার বেআইনি একাধিক স্কুটি

সমাজ সেবা করাই নেশা নীলকণ্ঠের